উদ্ভিদ বিদ্যামতে পাট করকোরাস (Corchorus) শ্রেণীর গাছ-জাত। এ শ্রেনীর গাছ-গাছড়া সর্বপ্রথম ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে জন্মায় ও পরে ভারতবর্ষ ও আশে পাশে ছড়িয়ে পড়ে। ১৮২০ খ্রীস্টাব্দে অক্সফোর্ডের নিকটবর্তী এবিংডনে পরীক্ষামূলকভাবে সর্বপ্রথম পাটের আঁশ দিয়ে সুতা পাকানোর চেষ্টা চলে। সেই সময় স্কটল্যান্ডের ডান্ডি অঞ্চলে পাটের সুতা পাকানোর কিছু শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠে। নেপোলিয়ানের সময়কার যুদ্ধের পর রাশিয়া হতে লিনেন ও শনের আমদানী বন্ধ হইয়া যাবার পর ১৮২২ খ্রীস্টাব্দে ডান্ডির উৎপাদকগন পাটের আঁশ হতে সুতা পাকাইতে বাধ্য হয়। প্রায় দশ বছর পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তাহারা পাট হইতে চমৎকার সুতা পাকাইতে সক্ষম হয়।১৮৫০ খ্রীস্টাব্দের মধ্য এ অঞ্চলের পাট শিল্প সুদৃঢ় ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত হয়। পাট শিল্পে বাংলাদেশঃ মৌসুমী বায়ু প্রবাহিত হওয়ায় উষ্ণ ও আদ্র জলবায়ুর এবং মাটির কারনে পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ পাট এ অঞ্চলেই জন্মে। সেই সুবাদেই ১৯৫১ খ্রীস্টাব্দে বাংলাদেশের নারায়নগঞ্জ শহরের শীতলক্ষ্যার তীরে ২৯৭ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত হয় পৃথিবীর বৃহত্তম পাটকল আদমজী জুট মিল্স। এটি ছিল তদানিন্তন পূর্ব পাকিস্তানের ২য় পাট কল (প্রথমটি হল বাওয়া পাট কল)।এর আগে সমস্ত পাট রপ্তানী হতো বিদেশের বাজারে। আদমজীকে এক সময় বলা হতো প্রাচ্যের ডান্ডি (স্কটল্যান্ডের ডান্ডির নামানুসারে)। পরবর্তীতে মূলত ষাট ও সত্তর এর দশকে দেশে অসংখ্য পাটকল স্থাপিত হয়। পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমানের বাংলাদেশ) এর উন্নতমানের পাট ব্যবহার করে আদমজী পাটকলে উৎপাদিত হতো চট, কার্পেটসহ বিভিন্ন প্রকার পাটজাত দ্রব্য। যা দেশের চাহিদা পূরণ করে রপ্তানি হতো চীন, ভারত, কানাডা, আমেরিকা, থাইল্যান্ডসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে। এ সময় আদমজী জুট মিল হয় পৃথিবীর অন্যতম জুট মিল এবং এশিয়া মহাদেশের সর্ববৃহৎ কারখানা ছিল। ঐ সময় এ মিলের উৎপাদন হইতে বছরে ৬০ কোটি টাকা আয় হত। ক্রান্তিকালঃ ১৯৭০ এর দশকে প্লাস্টিক ও পলিথিন পাটতন্তুর বিকল্প হিসেবে আত্নপ্রকাশ করলে আদমজী পাটকলের স্বর্ণযুগের অবসান হয়। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরে এটিকে জাতীয়করণ করা হয়। তখন থেকে ১৯৮০ এর দশকের কয়েকটি বছর ব্যতীত অন্য সব বছর এটি বিপুল পরিমাণে লোকসান দেয়। শ্রমিক ও বামপন্থী রাজনৈতিক দলগুলোর বাধা সত্ত্বেও ২০০২ খ্রীস্টাব্দের ২২শে জুন এই কলটি বন্ধ করে দেয়া হয়। পরবর্তীতে এর ধারাবাহিকতায় একের পর এক মিল বন্ধ হতে থাকে। অনেক বিশেষজ্ঞদেরে মতে শুধুমাত্র আদমজী বন্ধ করার মাশুল এ দেশকে বহুবছর দিয়ে যেতে হবে। বিশ্বজুড়ে প্লাস্টিক ও এর প্রভাবঃ ২০০১ সালে যুক্তরাষ্টের পরিবেশ সংরক্ষন বিষয়ক দপ্তর (ইপিএ) খুঁজে পেয়েছে বিশ্বব্যাপী প্রতি মিনিটে প্রায় ১ মিলিয়ন পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার হচ্ছে। এর মধ্যে মাত্র ০.৫ থেকে ৩.০ শতাংশ পুনঃব্যবহারযোগ্য করা হচ্ছে (বিবিসি,সিএনএন)। সঠিক পরিবেশ পেলে একটি প্লাস্টিক ব্যাগ প্রাকৃতিক পরিবেশে মিশে যেতে প্রায় ১০০০ বছর লাগে।এটি মাটির মধ্যে অবস্থান করে অক্সিজেন ও পানির প্রবাহকে ব্যাহত করে। পোড়ানো হলে এর বিষাক্ত ধোঁয়া বায়ু দূষন করে , সমুদ্রে পড়লে আরও অনেক বেশী ক্ষতি সাধন করে। বিশ্বজুড়ে এর ভয়াবহতা বুঝতে পেরেই ২০০৩ থেকে এই পর্যন্ত আফ্রিকা, এশিয়া প্যাসিফিক, দক্ষিন-পূর্ব এশিয়া, ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র সহ আরো অনেক দেশে প্লাস্টিক ব্যাগ ব্যবহার নিষিদ্ধ হতে থাকে। তখন বিকল্প হিসেবে পুনঃব্যবহারযোগ্য কাপড়ের ব্যাগ ব্যবহারের কথা ভাবা হয়। কিন্তু যখন স্বাস্থ্য বিনষ্ট, জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ দূষনের কথা মাথায় আসে তখন সবার প্রথম পছন্দ হিসেবে চলে আসে পরিবেশ বান্ধব “পাট”।
সাম্প্রতিক সময়ে কিছু অগ্রগতিঃ দুঃখজনকভাবে এ শিল্প বহুভাবে অবহেলিত হলেও, পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক বাজার ও পরিবেশ বান্ধবের কারনে সরকার এর গুরুত্ব উপলব্ধি করতে পেরে কিছু যুগোপযুগী পদক্ষেপ গ্রহন করেন। যা সত্যিই প্রশংসনীয়। যেমনঃ- • পাটখাতকে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে বিবেচনায় নিয়ে “পাটনীতি” প্রণয়ন করা হয়েছে। • জাতীয় সংসদে “পণ্যের মোড়কীকরণে পাট পণ্যের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন-২০১০” পাশ করেছে। • বিশ্বের সবচেয়ে বড় পাট উৎপাদক ও রপ্তানীকারক সংস্থা “বিজেএমসি”কে (বাংলাদেশ জুট মিলস কর্পোরেশন) আধুনিক করার লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ হাতে নেয়া হয়েছে। • পাটপণ্যের পরিচিতির জন্য দেশীয় ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মেলায় পাটজাত পণ্যের প্রদর্শনীর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। • বিভিন্ন সময়ে বন্ধ হয়ে যাওয়া পাটকলগুলো পুনরায় চালুর পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে ও নতুন শিল্প-প্রতিষ্ঠান স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। • সম্প্রতি সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক “গোল্ডেন ফাইবার” এর নাম পুনরুদ্ধারের উদ্দেশ্যে দেশের পাট খাতের জন্য ১ বিলিয়ন টাকা পুনঃঅর্থনৈতিক সংস্থানের তহবিল তৈরির ঘোষণা করে। • ১৯/০৮/২০১৩ ইং তারিখে বাংলাদেশ পাট গবেষনা ইনষ্টিটিউট এর বিজ্ঞানী ড. মকসুদুল আলমের নেতৃত্বে দেশি পাটের জীবন রহস্য উন্মোচন করে গোটা বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দেয়। অবশ্য এর আগে তারা এর পাটের আরেকটি জাত তোষা পাট ও পাটের জন্য ক্ষতিকারক একধরনের ছত্রাক ম্যাক্রোফোমিনা ফ্যাসিওলিনার জীবন রহস্য আবিষ্কার করেছিল। যার সুফল অচিরেই এ শিল্পের জন্য মঙ্গল বয়ে আনবে। বর্তমান অবস্থাঃ বর্তমানে পাট শিল্প আবার তাঁর হারানো গৌরব ফিরে পেতে গুরু করেছে। সরকারী পাটকল গুলোকে আধুনিকায়ানের লক্ষ্যে নতুন কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ, মানবসম্পদ উন্নয়নের লক্ষ্যে যুগোপযুগী প্রশিক্ষন ও তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার অব্যাহত আছে। বাস্তবমুখী পদক্ষেপ গ্রহন করার ফলে ১৯৮২-৮৩ সালের পর প্রথমবারেরমত “বিজেএমসি” ২০১০-১১ অর্থ বছরে ১৯.৫২ কোটি টাকা লাভ করে (সূত্রঃ বিজেএমসি বুলেটিন-এপ্রিল,২০১৩)। বর্তমানে দেশে সরকারী, বেসরকারী মিলে ১০০ এর বেশী পাটকল চালু আছে। দেশের মোট জনসংখ্যার একটা বিশাল অংশ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে পাট খাতের সঙ্গে জড়িত। পাটকলগুলোর উৎপাদিত পণ্যসমূহ হেসিয়ান, সেকিং, সিবিসি, জিওজুট/সয়েল, সেভার কম্বল, শপিং ব্যাগ,পাট ও প্লাস্টিকের সমন্বয়ে আসবাবপত্র ইত্যাদি। বর্তমানে বিশ্বের ৮৪ টি দেশে বিজেএমসির পাট ও পাটজাত পণ্য গৌরবের সাথে রপ্তাণী হচ্ছে এবং ১০০ এর বেশী দেশে রপ্তানীর সুসম্পর্ক বজায় আছে। বিশ্বে পাট পণ্য ব্যবহারের ৭৫ ভাগই প্যাকেজিং আইটেম। তাই পাটের বহুমুখী ব্যবহার ধরে রাখতে নতুন ও ভিন্নধর্মী পণ্য আবিষ্কারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।নতুন পণ্য তালিকায় আছে জুট প্লাস্টিক,দেয়াল আবরণী,বৃহদাকার ব্যাগ,চা-ব্যাগ,জিও-জুট,কম্বল,জুতো-স্যান্ডেল,স্কুল ব্যাগ, ব্রীফকেস, হ্যাট-টুপি ইত্যাদি।
"OMMI" consists of young and dynamic professionals thriving to provide the widest spectrum of corporate service solutions in a single window. We are a professionally equipped company started with the mission to provide a comprehensive range of Management Consultancy Services to our clients.
নিজের পায়ে দাঁড়াতে হলে আপনাকে উদ্যোগী হতে হবে। আর উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য ঠিক করতে হবে, কী দিয়ে শুরু করবেন। এজন্য দরকার অল্প পুঁজিতে শুরু ক...
Widgetized Footer
Graphic Works
Newsletter
Get All The Latest Updates Delivered Straight Into Your Inbox For Free!
Author
Hello, my name is Jack Sparrow. I'm a 50 year old self-employed Pirate from the Caribbean. Learn More →
Facebook
Horizontal Post Sample
Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit. Morbi adipiscing augue quis augue egestas, sed gravida diam viverra. Ut vehicula quis nisi consequat rutrum. Morbi pulvinar arcu vel pellentesque dictum.